দেশে কয়েকটি জেলায় পানি নামতে
শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কমে আসছে নদীর পানিও। বিপদসীমার
নিচে নেমেছে অনেক নদীর পানি। তবে এখনও কুশিয়ারা, মনু, গোমতী, মুহুরী
নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও
সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ দেশের চার নদীর ছয় স্টেশনের পানি বিপদসীমার
ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, গতকাল ছয় নদীর ৯টি স্টেশনের পানি বিপদসীমার ওপরে
ছিল। গতকাল বিপদসংকেতের ওপরে থাকা স্টেশনগুলোর মধ্যে ফেনী নদীর রামগড়
স্টেশনের পানি, খোয়াই নদের বাল্লা স্টেশনে পানি, হবিগঞ্জ স্টেশনে পানি
বিপদসীমার নিচে নেমে গেছে।
এদিকে গোমতী নদীর কুমিল্লা স্টেশনের পানি ছিল
৯৬, আজ তা নেমে ৭৮, মনু নদের মৌলভীবাজার স্টেশনে পানি গতকাল ৯১
সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল, আজ তা ২৩ সেন্টিমিটার, মুহুরী নদীর পরশুরাম
স্টেশনের পানি বিপদসীমার ওপরে আছে আজও। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত
এলাকা হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। এদিকে সব মিলিয়ে কুশিয়ারা নদীর
তিন স্টেশনের পানি আজও বিপদসীমার ওপরে থাকলেও এখন পানির পরিমাণ অনেক কমে
এসেছে।
তাদের পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি কমা অব্যাহত আছে। গত ২৪ ঘণ্টায়
পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা
সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাগুলোর
উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানি কমা অব্যাহত
আছে। ফলে বর্তমানে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের
নি¤œাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে।
আবহাওয়া
সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উজানে
ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও
হবিগঞ্জের মনু, খোয়াই, ধলাই নদগুলোর পানি কমতে পারে এবং সংলগ্ন নি¤œাঞ্চলের
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য
অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও উজানে মাঝারি থেকে ভারী
বৃষ্টিপাতের শঙ্কা আছে। এ সময় এ অঞ্চলের কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি সমতল
স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং আশপাশের নি¤œাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল
থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে। এ সময় এ অঞ্চলের
বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের সাঙ্গু, মাতামুহুরী,
কর্ণফুলী হালদা ও অন্য প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি সময়বিশেষে বাড়তে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনীর নি¤œাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে কোনও কোনও স্থানে স্থিতিশীল থাকতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা
নদীর পানি সমতলে কমছে, অপরদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা
আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের
সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে
পারে।
দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদ-নদীগুলোর পানি
সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল আছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এই নদ-নদীগুলোর স্বাভাবিক
প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে
খুলনায় ১৫০ মিলিমিটার। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জে ১২৩, লামায় ৯১, পটুয়াখালীতে ৭৫,
টেকনাফে ৭২, বরিশালে ৬৯, মাদারীপুরে ৬৪, সুনামগঞ্জের মহেশখোলায় ৫৯, সিলেটের
লাটুতে ৫০ এবং নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা
হয়েছে।
এদিকে উজানে আসামের সিলচরে ৩৩, মিজোরামের আইজলে ১৭, চেরাপুঞ্জিতে ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।