রোববার ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
৪ ফাল্গুন ১৪৩১
‘দ্রোহ যাত্রা’ কর্মসূচি ডাক
প্রকাশ: শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪, ১২:২৪ এএম |




কোটা আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতার পর গ্রেপ্তার সবাইকে মুক্ত করে দিতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে 'দ্রোহ যাত্রা' নামে একটি কর্মসূচি ডাক এসেছে। বৃহস্পতিবার রমনার মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানিয়ে কর্মসূচির ডাক এসেছে।
‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’ এর নামে মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, “আমাদের সকল শিক্ষার্থীকে যদি ছেড়ে দেওয়া না হয়, যদি হত্যার বিচার করা না হয়, যদি অবিলম্বে শিক্ষাঙ্গণ খুলে দেওয়া না হয় তাহলে আমাদের বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আরও কঠোর ও অব্যাহত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী বলেন, “আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আগামীকাল (শুক্রবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিকেল ৩টায় ‘দ্রোহ যাত্রা’ নামে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই সমাবেশে ছাত্র শিক্ষক সুধী সমাজে অংশ গ্রহণ করবেন। এতগুলো হত্যার বিচার চাই।” সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা শুনেছি কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সম্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আমরা খুশি, কিন্তু সন্তুষ্ট নই। কারণ এখনো ঢাকাসহ সারাদেশে আটক ছাত্র শিক্ষক, সাধারণ মানুষ বিনা বিচারে আটক আছে।"
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে গত ১৮ জুলাই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সেদিন শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন ছাত্রের মৃত্যুর পর বিকালে একযোগে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা হতে থাকে। সংঘাতে নানা পক্ষের জড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিতও স্পষ্ট হয়। নরসিংদীতে কারাগারে হামলা করে অস্ত্র লুট এবং সন্দেহভাজন ৯ জঙ্গিসহ সবাইকে মুক্ত করা হয়।
পরেরদিন পরিস্থিতি আরও সংঘাতময় হয়ে উঠলে রাতে জারি করা হয় কারফিউ। এর মধ্যেও ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মোহাম্মদপুরে সংঘাত চলতে থাকে। অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে থাকে।
এসব ঘটনায় সরকার দেড়শ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুই শতাধিক মৃত্যুর কথা ছাপা হচ্ছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকে পুলিশ ‘সহিংসতায় জড়িত’দের গ্রেপ্তারে ব্লক রেইড দিয়ে অভিযানে নামে। ঢাকাতেই মামলা হয় দুইশর বেশি। গ্রেপ্তারের সংখ্যা কয়েক হাজার।
এর মধ্যে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে পুলিশ ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে তুলে এনে ডিবি কার্যালয়ে রাখে। কয়েক ঘণ্টা পর ডিবি কর্মকর্তা হারুন অব রশীদ ও পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দাবি করেন, এরা স্বজনদের কাছে জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের কথা বলেছিলেন। সেটি জানতে পেরেই তাদেরকে নিয়ে আসা হয়। পরের দিন আরও দুই জন এবং ২৮ জুলাই আনা হয় আরও এক সমন্বয়ককে।
দ্বিতীয় দিন রাতে ও তৃতীয় দিন দুপুরের পর সমন্বয়কদের স্বজনরা তাদের সন্তানদের সঙ্গে দেখা করে এসে জানান, তারা ভালো আছে। এর আগেই ডিবি কার্যালয় থেকেই এই সমন্বয়করা তাদের সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা জানান।
এ নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে ডিবি কর্মকর্তা হারুন অর রশীদকে বুধবার বদলি করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এরপর ছয় সমন্বয়ককে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
কোটা আন্দোলনে সহিংসতার পর গ্রেপ্তার সবার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
কোটা আন্দোলনে সহিংসতার পর গ্রেপ্তার সবার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, “আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সম্বয়কের মুক্তির জন্য এখানে এসে শুনলাম তাদের নাকি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি না তারা আসলে নিরাপদে আছে কি-না।
“সারাদেশে অজস্র কারাগার গড়ে তোলা হয়েছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা আটকের মাধ্যমে। হাজার হাজার ছেলে মেয়েকে ব্লক রেইড দিয়ে দিয়ে কারাগারগুলো ভরে ফেলা হয়েছে। এই অবস্থা আজকেই থামাতে হবে। সমন্বয়কদের যেমন ছেড়ে দিয়েছেন সকল শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকদের ছেড়ে দিতে হবে।”
সারা দেশের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমাদের সন্তানদের রক্তে রঞ্জিত করার জন্য আপনাদের ওইখানে বসে রাখা হয় নাই। সমস্ত কারফিউ তুলে নেবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তুলে নেবেন।
“সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। মানুষের মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তা আটকে রাখার অধিকার আপনাদের কারো নাই।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মির্জা তাসলিমা সুলতানা বলেন, “আমাদের অনেক শিক্ষার্থী কারাগারে। আটকে রাখা সকল শিক্ষার্থীকে মুক্তি দিতে হবে।”
কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, বেসরকারি সংস্থা উবিনীগ এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমান, প্রয়াত জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরীন হক, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ নূর ও সদস্য রুমি প্রভা উপস্থিত ছিলেন।
















সর্বশেষ সংবাদ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এপিএস-২ আব্দুল মতিন সচিব পদমর্যাদা পাওয়ায় সংবর্ধনা
সংলাপের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু
সংস্কারে ঐকমত্য শেষে অতিদ্রুত নির্বাচনের আশা বিএনপির
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা মেঘনায় রুহুল কবির রিজভী
বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা মেঘনায় রুহুল কবির রিজভী
তাহেরী আসার সংবাদে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৯
দাউদকান্দিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হামলাকারী দুই নারী গ্রেফতার
সংলাপের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২