শুক্রবার ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
৪ মাঘ ১৪৩১
মানবপাচারে সাজার চেয়ে খালাস বেশি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪, ১২:৩৭ এএম |

মানবপাচারে সাজার চেয়ে খালাস বেশি
কিছুটা উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় প্রতিবছর শত শত তরুণ অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি জমান। তাঁদের কেউ কেউ প্রচ- দুর্ভোগ মোকাবেলা করে শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলেও অনেকেই তা পারেন না। অনেককেই অত্যন্ত করুণ পরিণতির মুখোমুখি হতে হয়। হয় সাগরে ডুবে মৃত্যু হয়, না হয় মরুভূমিতে অনাহারে বা তৃষ্ণায় জীবন যায়।
কখনো কখনো ঠাঁই হয় গণকবরে। অনেক সময় জিম্মি করে অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হয় এবং তাঁদের পরিবারকে বাধ্য করা হয় মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দিতে। তার পরও বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে অনেক তরুণই দালালদের পাতা ফাঁদে পা দেন।  ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পাচারের উৎস দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে শীর্ষস্থানে।
অনেক বাংলাদেশিকে লিবিয়া বা অন্য কোনো দেশে নিয়ে জিম্মি করে অর্থ আদায় করার অনেক ঘটনাও খবরের কাগজে এসেছে।
মানবপাচার প্রতিরোধে দেশে আইন আছে। ২০১২ সালে প্রণীত আইনে মানবপাচারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- থাকলেও এই আইনে শাস্তির দৃষ্টান্ত খুবই কম। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ১৮৮টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।
পাঁচজন আসামি যাবজ্জীবন কারাদ- ও ৩১ জন আসামি বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পেয়েছেন। এতগুলো মামলায় একটিও মৃত্যুদ- নেই। অন্যদিকে রায়ে ৬৩২ জন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন বলছে, ১৮৮টি মামলার মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র ১৩টি মামলার রায়ে। ১৭৫টি মামলায়ই আসামিরা খালাস পেয়েছেন।
খালাস পাওয়া আসামির উচ্চহারের কারণ হিসেবে বিচারপ্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগীর কম উপস্থিতি, রায়ের আগে বোঝাপড়া ও আসামিপক্ষের প্রভাবকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গত মে মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন থানায় ছিল এক হাজার ২০টি মামলা। আদালতে বিচারাধীন দুই হাজার ৮৬৬টি মামলা। প্রতিবেদন অনুসারে, গত পাঁচ মাসে মানবপাচার আইনে ৪৪০টি মামলা হয়েছে। মে মাস পর্যন্ত ৭৫টি মামলার তদন্ত শেষ করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। আর এক হাজার ২০টি মামলার তদন্ত এখনো চলছে। জননিরাপত্তা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এই মামলায় গত পাঁচ মাসে সারা দেশে ১৫ হাজার ৭২২ জন সন্দেহভাজন মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। পাঁচ মাসে খালাস পেয়েছেন ৬৩২ জন। ৩৬ জন সাজা ভোগ করছেন। বাকিরা জামিনে রয়েছেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাজার চেয়ে খালাস বেশি হওয়ার পেছনের কারণ রাষ্ট্রপক্ষের দুর্বলতা। রাষ্ট্রের আইনজীবীরা মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হন না। যাঁরা মামলা তদন্ত করেন তাঁদেরও সক্ষমতার অভাব রয়েছে। এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই রাষ্ট্রকে আরো সতর্ক হতে হবে। আবার আসামিদের বিপক্ষে নিরপেক্ষ সাক্ষীরা ভয় পেয়ে সাক্ষ্য দিতে আসেন না। এটাই হলো মূল কারণ। আসামিরা বেশির ভাগই সন্ত্রাসী। একজন আসামির জন্য তিন থেকে চারজন করে সাক্ষী থাকতে হয়। এত সাক্ষীকে নিরাপত্তা দেওয়া খুবই কঠিন। সাক্ষীদের মন থেকে ভয় সরে গেলে খালাসের সংখ্যা কমে যাবে।
মানবপাচার বৈধ অভিবাসনকেও ঝুঁকিতে ফেলছে। ইউরোপের দেশগুলোতে থাকা অবৈধ বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশকে নিয়মিত চাপ দেওয়া হচ্ছে। আবার পথে যারা ধরা পড়ছে তাদেরও ফিরিয়ে আনতে হচ্ছে। দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়া থেকে তরুণদের রক্ষা করতে হবে। এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালাতে হবে। একই সঙ্গে দেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। বৈধভাবে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে।












সর্বশেষ সংবাদ
ঐক্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়াটা জরুরি : প্রধান উপদেষ্টা
নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে ১৫০ সুপারিশ কমিশনের
এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না
নাঙ্গলকোটে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৪ শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ
কুমিল্লায় হলুদ আর সবুজে মুখরিত সরিষার মাঠ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লার দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপের’অন্যতম সদস্য মাইনুদ্দিন আটক
কুমিল্লায় তিন প্রতিষ্ঠানকে ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা
চৌদ্দগ্রামে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
দুটি পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসী আটক
কুমিল্লা মেডিকেল ছেড়ে কোথায় গেলো শিশুটি?
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২