বিশ্ব
চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে আগে সিরিজ হারিয়েছিল
শ্রীলঙ্কা। গতকাল ছিল তাদের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচ। দেয়াল পিঠ ঠেকে
যাওয়ায় লঙ্কানরা ভালোই জবাব দিচ্ছিল ভারতকে। হাতের মুঠোয় ম্যাচও ছিল তাদের।
কিন্তু হঠাৎ বিপর্যয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করে ভারতকে ম্যাচটা উপহার দিয়ে আসল
স্বাগতিকরা।
পাল্লেকেল্লেতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শ্রীলঙ্কা
১৩৭ রানে আটকে রাখে। জবাবে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৮ এবং দ্বিতীয় উইকেটে ১১০ রান
তুলে শ্রীলঙ্কা জয়ের পথে ছিল। হাতে ৯ উইকেট রেখে শেষ ৩০ বলে তাদের প্রয়োজন
ছিল ৩০ রান। এতো সহজ সমীকরণ তারা মেলাতে পারেনি। শেষ বলে যখন ৩ রান
প্রয়োজন তখন ২ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করেন অভিষিক্ত চামিন্দু ওইকরামাসিংহে।
ম্যাচ
গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে শ্রীলঙ্কার আরো বিপর্যয়ে। স্পিনার ওয়াসিংটন
সুন্দরের ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে আউট যথাক্রমে কুশল পেরেরা ও পাথুম
নিসাঙ্কা। অথচ স্কোরবোর্ডে রান কেবল ২! সহজ এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে
ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার প্রথম বলে হাঁকান বাউন্ডারি। তাতে সুপার ওভার
জিতে শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত।
এর
আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের শুরুটা একদমই ভালো ছিল না। স্কোরবোর্ডে
পঞ্চাশ তোলার আগে তাদের ৫ ব্যাটসম্যান সাজঘরে। ইয়াসভি জয়সওয়াল (১০), সানজু
সামস্যান (০), রিংকু সিং (১), সূর্যকুমার যাদব (৮) ও শিভাম দুবে (১৩) দ্রুত
আউট হন। একপ্রান্ত আগলে শুভমান গিল লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দলের
প্রয়োজন মেটাতে পারছিলেন না।
ষষ্ঠ উইকেটে তাকে সঙ্গ দেন রিয়ান পরাগ।
দুজন ৫৪ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন। ষোলাতম ওভারে ভারতের রান যখন ১০২
তখন আবার হোঁচট খায়। একই ওভারে দুই থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান আউট হন। লেগ
স্পিনার হাসারাঙ্গার বলে গিল প্রথমে ৩৯ রানে স্টাম্পড হন। পরাগ ১৮ বলে
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ রান করে মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন। শেষ দিকে
সুন্দরের ১৮ বলে ২৫ রানের সুবাদে ভারতের স্কোর ১৩৭ রানে পৌঁছে।
নিয়ন্ত্রিত
বোলিংয়ে বোলাররা লক্ষ্য নাগালে রেখেছিল। মাহেশ থিকসানা ২৮ রানে ৩ উইকেট
নিয়ে ছিলেন স্বাগকিদের সেরা বোলার। ২ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। অভিষিক্ত
চামিন্দু ওইকরামাসিংহে খারাপ করেননি। ১৭ রানে পেয়েছেন ১ উইকেট। ১টি করে
উইকেট পেয়েছেন আশিথা ফার্নান্দো ও রামেস মেন্ডিসও।
জবাব দিতে নেমে
উদ্বোধনী জুটিতে নিসাঙ্কা ও মেন্ডিস ৫৮ রান যোগ করেন। লেগ স্পিনার বিস্মনয়
এই জুটি ভাঙেন নিসাঙ্কাকে ২৬ রানে ফিরিয়ে। সেখান থেকে মেন্ডিস ও পেরেরা
দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন। দুজনই পৌঁছে যান চল্লিশের ঘরে।
শেষ ৫
ওভারে লঙ্কানদের ইনিংসে নেমে আসে বিপর্যয়। এ সময়ে ২৭ রান করতে তারা হারায় ৯
উইকেট। তাতে ম্যাচটা গড়ায় সুপার ওভারে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৬ বলে ৬ রান
লাগত শ্রীলঙ্কার। সেখানে বল হাতে নেন সূর্যকুমার। সবকিছু ছিল তাদের
বিপক্ষে। পেনাল্টির কারণে বৃত্তের বাইরে ছিল কেবল চার ফিল্ডার।
সূর্যকুমার
প্রথম বলটি দেন ডট। পরের ২ বলে নেন ২ উইকেট। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ৩ রান
দেওয়ায় শেষ বলে সমীকরণ নেমে আসে ৩ রানে। ওই রান চামিন্দু ওইকরামাসিংহে আর
নিতে পারেননি। ২ রান নিয়ে ম্যাচটা সুপার ওভারে নিয়ে যান। সেখানে স্বাগতিকরা
স্রেফ আত্মসমর্পণই করে।
মূল ম্যাচে ও সুপার ওভারে ২টি করে উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন সুন্দর। সিরিজ সেরা হয়েছেন সূর্যকুমার।
দুই দল টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে। কলম্বোতে প্রথম ওয়ানডে ২ আগস্ট।