বৈদেশিক কর্মসংস্থানের
রিক্রুটিং প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীরা আইনি কাঠামোর আওতায় আসছে। এক্ষেত্রে
নিবন্ধনের মাধ্যমে তারা স্বীকৃতি পাবে। এ বিধান করে বৃহস্পতিবার (১৪
সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী (সংশোধন) বিল পাস
হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে সংশোধনী প্রস্তাবগুলো
নিষ্পত্তি করা হয়।
বিলের সংজ্ঞায় ‘সাব এজেন্ট বা প্রতিনিধি’ সংজ্ঞা
নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাব এজেন্ট বা প্রতিনিধি অর্থ—
এই আইনের অধীনে নিবন্ধিত কোনও ব্যক্তি, যিনি কোনও রিক্রুটিং এজেন্টের সাব
এজেন্ট বা প্রতিনিধি হিসেবে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য এজেন্টের চাহিদা
অনুযায়ী অভিবাসী কর্মী সংগ্রহ করেন।
এ ছাড়া বিলে অভিবাসী কর্মী ও তাদের
পরিবারের সদস্যদের কল্যাণে ব্যাংক ঋণ, কর রেয়াত, সঞ্চয়, বিনিয়োগ, আর্থিক
সহায়তা, বৃত্তি দেওয়া ইত্যাদি প্রবর্তন ও সহজ করতে ব্যবস্থা করার বিধান
রাখা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, বৈদেশিক কর্মস্থলে নারী অভিবাসী কর্মীদের
সম্মান, মর্যাদা, অধিকার, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ
আর্থিক ও অন্যান্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে।
বিলে রিক্রুটিং
এজেন্সিগুলোর জবাবদিহি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিদ্যমান প্রশাসনিক ব্যবস্থার
অতিরিক্ত হিসেবে অপরাধ সংঘটনের জন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে ৫০ হাজার থেকে দুই
লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। তদন্ত ও শুনানি ছাড়া অভিযোগের গুরুত্ব
বিবেচনায় রিক্রুটিং লাইসেন্সের কার্যক্রম স্থগিত করার বিধান করা হয়। বিলে
বৈদেশিক কর্মসংস্থানের রিক্রুরিং প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের আইনি
কাঠামোতে জবাবদিহির আওতায় আনার লক্ষ্যে সাব-এজেন্ট বা প্রতিনিধি নিয়োগ এবং
সংশ্লিষ্টদের দায়-দায়িত্বের বিধান সংযোজন করা হয়েছে।
বিলের আলোচনায় অংশ
নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, নারীরা লাশ হয়ে ফিরে
আসছেন। কিন্তু বলে দিচ্ছে স্বাভাবিক মৃত্যু। দেশে মরদেহ আসার পর
পোস্টমর্টেম করা উচিত। এভাবে গিয়ে নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণের চেয়ে দেশে
কাজের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। যারা কাজের উদ্দেশে বিদেশে যান, এয়ারপোর্টে
তারা এমনভাবে নিগৃহীত হন, যেন তারা অপরাধী। আসার সময়ও হয়রানির শিকার হন।
এয়ারপোর্টে তাদের জন্য আলাদা ডেস্ক করা দরকার।
জাতীয় পার্টির শামীম
হায়দার পাটোয়ারী বলেন, পাসপোর্ট এম্বাসি ওনাদের হাতে না। ওয়ান স্টপ
সার্ভিসে আসতে হবে। এই রেমিট্যান্স বাদ দিলে কী আছে? গার্মেন্টসের আয় ৮০
ভাগ কাঁচামালে চলে যায়। একমাত্র রেমিট্যান্স সরাসরি রিজার্ভে যোগ হয়। তাদের
বরাদ্দ খুবই কম। এয়ারপোর্টে হয়রানি হচ্ছে। তাদের জন্য আলাদা লাউঞ্জ করা
দরকার।
গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, নারী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে যায়।
তাদের দুরবস্থার কথা সবার জানা। কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ দূতাবাস নেয় কিনা,
তা খুব জানা যায়। বিধান সংযুক্ত করার দাবি জানাবো, যে নারী শ্রমিক বিদেশে
যান, যে কাজে গিয়েছেন, তার স্বাস্থ্যগত অবস্থা, মানসিক ও শারীরিক অবস্থা
সম্পর্কে তিন মাসের মধ্যে দূতাবাস একটি রিপোর্ট দিতে বাধ্য থাকলে, নারী
শ্রমিকদের অনেক উন্নতি হবে।