বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০
যে কোন ন্যায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ জরুরি...
প্রকাশ: শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২২, ১:১০ এএম |

 যে কোন ন্যায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ জরুরি...


আমি এমন অনেককে দেখেছি যারা সারা জীবনের জন্যে একটি স্থায়ী হীনম্মন্যতা-পরাজয়বোধ সৃষ্টি করেছেন নিজেই। কিভাবে এটা হলো? হয়েছে কারণ সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ জীবনে কখনো হয়তো চোখের সামনের এক বা একাধিক ন্যায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবার বদলে এড়িয়ে-পালিয়ে থেকেছেন। কিন্তু সেই থেকেই যে কিছু হীনম্মন্যতা-পরাজয়বোধ তার পিছু নিয়েছে এবং পরবর্তীতে তাকে অপমানে গ্রাস করেছে সেটি তিনি বুঝতে পারেননি। পরিস্থিতি থেকে আমাদের শরীর পালাতে পারলেও মন-বোধ-বিবেক যে পালাতে পারেনা সেই বিজ্ঞান তিনি জানেন না।  
এই যে আমাদের সমাজে মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার-সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন হলো, যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে বা এখনো নানাভাবে ন্যায়ের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন সংগ্রাম হচ্ছে তাতে নাগরিক বা একজন সাধারণ বিবেকবান মানুষ হিসেবেও আমাদের অংশগ্রহণ খুব জরুরি। এক্ষেত্রে কিন্তু দলকানা হলে চলবে না বরং আত্মসমালোচক হতে হবে। বলাই বাহুল্য-এই অংশ নেয়া হবে একেক জনের একেক রকম। সবাই একইভাবে তৎপর বা সাহসী হবেনা। কিন্তু মানুষ হিসেবে অবশ্যই আমাদের কিছুটা প্রতিক্রিয়াপ্রবণ হতে হবে, দৈনন্দিন জীবন যাপনের পাশাপাশি কখনো রাখতে হবে ঐতিহাসিক মানবিক ভূমিকা। এটি রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক বা খুবই ছোট-ব্যক্তিক পরিসরে হতে পারে।
একজন তরুনের জন্যে এই কারণেই ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া জরুরি ছিল, আবার স্বাধীন দেশে স্বৈরাচার-সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে যে কোন মাত্রায় অংশ নেয়াও ছিল সময়ের দাবি। শাহবাগ আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়ানো যেমন দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে আমাদের কর্তব্য ছিল তেমনি বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে কার্মকান্ডে-মিছিলে অংশ নেয়াও যে কোন সরকারের আমলে যে কোন সময়ে একটি জরুরি বিষয়। অর্থাৎ মানুষ-ব্যক্তি হিসেবে আমার এমন একটি অবস্থান রক্ষা করা জরুরি আমি যাতে সময়ের দাবিতে সাড়া দিতে পারি।
ন্যায়ের পক্ষে প্রতিবাদ প্রতিরোধ বা যে কোন অংশগ্রহণ হচ্ছে আমাদের সুস্থ্য সতেজ সাহসী থাকবারও উপায়। মানুষ বোধসম্পন্ন প্রাণী, পলায়ন মানুষকে মানায় না, এটি কিন্তু কোন সমাধানও বয়ে আনেনা। এড়িয়ে থাকা বা পালিয়ে থাকা জীবনের একটি অভিশপ্ত অধ্যায়। আমি প্রবাসকালীন একাধিক ব্যক্তিকে চিনতাম যারা নব্বই এর গণ অভ্যুত্থানের আগে ভয় পেয়ে দেশ থেকে পালিয়ে বিদেশ চলে গিয়েছিলেন। আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করতাম এই নিয়ে তাদের হীনম্মন্যতা আর ম্রিয়মানবোধ সুযোগ পেলেই স্পষ্ট হতো। খুব ছোট থাকতো এদের মন কারণ মন থেকে মুছতে পারতো না সেই কাপুরোষিত পলায়ন। ইতিহাসের-সময়ের একটি অনিবার্য দায়িত্ব এরা যে পালন করতে পারেননি-ক্ষুদ্র ব্যক্তি স্বার্থে যে পালিয়ে বেড়িয়েছেন মূলত নিজ থেকে-এই পরাজিত অপমানবোধ এদের পরবর্তী জীবনকে কুড়ে কুড়ে খেয়েছে। সুতরাং এড়ানো বা পালানোর চেয়ে সময়কে মোকাবেলা করা খুব খুব দরকার। একবার এই মোক্ষম সময়টা চলে গেলে পরে কিন্তু আর তা পাওয়া সম্ভব  নয়। পরে থাকে শুধু অংশগ্রহন না করতে পারার শূন্যতাবোধ আর গ্লানি।
সময়ের যে কোন সাহসী ডাকে সবসময় সাড়া দিতে হয়। ইতিহাসের এই দাবি না মেটালে সারাজীবন একটি পরাজিত মানসিকতা-হীনম্মন্যতা একজনকে কুড়ে কুড়ে খায়। খুব ভয়াবহ এই অভিজ্ঞতা। মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী সকল ন্যায়ের যুদ্ধ থেকে পালিয়ে বেড়ানো মানুষদের মৃত্যু হয়ে গেছে আসল মৃত্যুর আগেই।  
ন্যায়ের পক্ষে যে কোন যুদ্ধে অংশ নেয়া উচিত সবার। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে কোন আয়োজনে দূর থেকে হলেও অপরাধী-অপরাধের উদ্যেশ্যে একটি ঢিল ছুঁড়ে দাও...















সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন,আটক ৩
স্বাগত ২০২৩: অকল্যান্ডে আতশবাজির মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ
কুমিল্লায় অভাবের তাড়নায় মা-মেয়ের আত্মহত্যা
সাবেক পোপ বেনেডিক্ট মারা গেছেন
কুমিল্লায় নির্মানাধীন ভবনের প্রহরীর মরদেহ উদ্ধার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় অভাবের তাড়নায় মা-মেয়ের আত্মহত্যা
কুমিল্লায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন,আটক ৩
মাহির মনোনয়ন নিয়ে যা বললেন ডা. মুরাদ
স্কুলে ৪ শ্রেণিতে এবার নতুন শিক্ষাক্রম
আওয়ামী লীগ ১২ স্বতন্ত্র ৫
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft