শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা
প্রকাশ: রোববার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ১:২১ এএম আপডেট: ০৪.১২.২০২২ ১:৫২ এএম |

অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা
প্রায় তিন বছর ধরে চলা করোনা মহামারিতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অনেকটাই থমকে গিয়েছিল। লকডাউন ও বিধি-নিষেধের কারণে শুধু চলাচল নয়, শিল্প-কলকারখানার চাকাও গতি হারিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শুরু হয়ে যায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। বিশ্বের বড় শক্তিগুলো কার্যত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়।
অবরোধ-নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ববাণিজ্যের স্বাভাবিকতা নষ্ট হয়। জ্বালানি তেলের দাম ও পরিবহন খরচ বেড়ে যায়। খাদ্যপণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। মূল্যস্ফীতির রেকর্ড সৃষ্টি হয়। অর্থনীতিবিদদের মতে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাও দুয়ারে আঘাত হানছে। স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। উন্নত দেশগুলোতে চাহিদা কমে যাওয়ায় আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের ক্রয়াদেশ ও রপ্তানির পরিমাণ কমছে। কমছে রপ্তানি আয়। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় মোট আমদানি ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। ফলে টান পড়ছে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার আরেকটি প্রধান উৎস রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয়। নানা কারণে সেই প্রবাস আয়ও কমছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী আগের বছরের তুলনায় ২০২২ সালে প্রবাস আয় ১০০ কোটি ডলার কমে যেতে পারে। দেশের অর্থনীতিকে শঙ্কামুক্ত করতে সরকার নানাবিধ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। সে কাজগুলোকে আরো ত্বরান্বিত করতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ৭ শতাংশের মতো কমতে পারে। তার পরও রেমিট্যান্স উপার্জনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তমই থাকবে। ২০২১ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ২০০ কোটি ডলার। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২২ সালে আসতে পারে দুই হাজার ১০০ কোটি ডলার। এর বিপরীতে একই দিনে প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন আমাদের কিছুটা আশ্বস্ত করছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী আগের দুই মাসের তুলনায় গত নভেম্বরে রেমিট্যান্স কিছুটা বেশি এসেছে। এটা ঠিক, অর্থনৈতিক সংকটের এই সময়ে যাঁরা রেমিট্যান্স পাঠান তাঁরাও কিছুটা অসুবিধায় রয়েছেন। অনেকে কাজ হারাচ্ছেন। আয়-উপার্জনও কমছে। ফলে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কিছু কমতেই পারে। অন্যদিকে হুন্ডির ব্যাপকতাও রেমিট্যান্স কমাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকার বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে বেশ কিছু সুবিধা প্রবর্তন করেছে। একই সঙ্গে হুন্ডির বিরুদ্ধে অভিযানও জোরদার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৩০ জন বেনিফিশিয়ারির হিসাব সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।
ব্যবসার আড়ালে মুদ্রাপাচারও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার স্বাভাবিক প্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমদানি পণ্যের দাম অতিরিক্ত দেখিয়ে অর্থপাচারকে বলে ওভার ইনভয়েসিং। অন্যদিকে রপ্তানি পণ্যের দাম কম দেখিয়ে অর্থপাচারকে বলে আন্ডার ইনভয়েসিং। আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি ওভার ইনভয়েসিংয়ের শঙ্কা থেকে ১০০ ঋণপত্র (এলসি) বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, কোনো কোনো এলসিতে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ইনভয়েসিং বা অতিরিক্ত মূল্য দেখানো হয়েছে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট সহসাই কেটে যাবে-এমনটা মনে করা যাচ্ছে না। তাই দেশের অর্থনীতিকে সাবলীল ও গতিশীল রাখতে পরিকল্পিত উদ্যোগ বাড়াতে হবে। হুন্ডি, মুদ্রাপাচার, ওভার ইনভয়েসিং, আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মতো ক্ষতিকর দিকগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।














সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন,আটক ৩
স্বাগত ২০২৩: অকল্যান্ডে আতশবাজির মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ
কুমিল্লায় অভাবের তাড়নায় মা-মেয়ের আত্মহত্যা
সাবেক পোপ বেনেডিক্ট মারা গেছেন
কুমিল্লায় নির্মানাধীন ভবনের প্রহরীর মরদেহ উদ্ধার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় অভাবের তাড়নায় মা-মেয়ের আত্মহত্যা
কুমিল্লায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন,আটক ৩
মাহির মনোনয়ন নিয়ে যা বললেন ডা. মুরাদ
স্কুলে ৪ শ্রেণিতে এবার নতুন শিক্ষাক্রম
আওয়ামী লীগ ১২ স্বতন্ত্র ৫
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft