সংবাদ সম্মেলনে লিওনেল মেসি এলেন না। এলেন
লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। আগের ম্যাচেও এমন হয়েছিল। হয়তো নিজের ওপর চাপ কমাতে
পোল্যান্ডের বিপক্ষেও ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলন পর্ব এড়ালেন। সাদা চোখে
এমনটি মনে হতে পারে অনেকের কাছে। আসলে আর্জেন্টিনা এখন যে অবস্থায় দাড়িয়ে
আছে সেখান থেকে এগিয়ে যেতে হলে মেসিকেই আবারও হাল ধরতে হবে। তার কোনও
বিকল্প নেই এই মুহূর্তে। তাকে ঘিরেই যে দল অনেক দিন ধরে চালিত হচ্ছে। বলতে
পারেন চাপটা ৩৫ বছর বয়সী প্লে-মেকারের ওপর একটু বেশি।
সৌদি আরবের কাছে
প্রথম ম্যাচে হারের পর চারদিকে সমালোচনা। খাদের কিনারায় চলে গিয়েছিল
আলবিসেলেস্তেরা। মেক্সিকোর বিপক্ষে কঠিন চাপ জয় করে নকআউট পর্ব উজ্জ্বল
করেছে আলবিসেলেস্তেরা। সেই ম্যাচে মেসি প্রথম গোল করে দলকে প্রাথমিক
চাপমুক্ত করেন। পরের টি এনজো ফের্নান্দেজ করে দলের জয় সুনিশ্চিত রাখেন।
এবার
পোল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচে লড়াই। এই ম্যাচেও জ্বলে উঠতে
হবে মেসি ও তার সতীর্থদের। আর হয়তো তার শুরুটা করতে হবে মেসিকেই! কেননা দল
যে অনেকটা তার দিকে তাকিয়ে থাকে-আছে। ভরসার খোঁজে।
তাই এই ম্যাচে
অন্যরকম চাপ কাজ করছে তা বলেই দেওয়া যায়। পোল্যান্ডের বিপক্ষে হারলে চলবে
না। জিততে তো হবেই। ড্র করলে তখন সৌদি আরব-মেক্সিকোর ফলের ওপর নির্ভর করবে
নকআউট পর্বের টিকিট মিলবে কিনা।
তাই জয়ের মিশনের চাকা সচল রাখতে হলে
পোলিশদের যে করেই হোক হারাতে হবে। নিজের ওপর দায়িত্ববোধটা আবারও মাঠের
খেলাতে দেখানো ছাড়ার আর কী বিকল্প আছে। মেক্সিকোর বিপক্ষে চাপের মুখে মেসি ও
তার সতীর্থরা প্রমাণ করেছে আর্জেন্টিনা জিততে জানে। জানে চাপের মুখেও
নিজেদের স্বভাবসুলভ খেলাটা দেখাতে।
পোলিশরা যতই হুমকি দিক নিশ্চয়ই মেসি ও
তার সতীর্থরা তা চাইবেন না অঘটন জাতীয় কিছু হোক। পোলিশদের দুরমুশ করে
স্কালোনির দল চাইবে এগিয়ে যেতে। সব চাপের বাধা টপকে লক্ষ্য-কোটি সমর্থকদের
মুখে হাসি ফোটাতে। তবে কাজটি যে সহজ হবে না তা বলেই দেওয়া যায়। এরই মধ্যে
পোলিশ রক্ষণ তো হুমকি দিয়ে রেখেছে। মেসিকে সহজেই ছেড়ে কথা বলবে না। তার
পায়ে বল বেশিক্ষণ রাখতে দেওয়া হবে না। পরিষ্কার কথা হলো মেসিকে ছন্দময়
ফুটবল খেলতে বাধার বড় দেয়াল হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে ইউরোপের অন্যতম দলটি।
তবে
মেসি যেদিন চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারে সেদিন তাকে আটকিয়ে রাখা বেশ কঠিন।
অল্প জায়গার মধ্যে লক্ষ্য খুঁজে নেওয়া কঠিন কিছু না পিএসজি তারকার কাছে।
মেক্সিকোর বিপক্ষে বুলেট গতির গোলটি তো জ্বলজ্বলে উদাহরণ। তাই পোলিশদের
সহজেই তাকে আটকে রাখাটা কঠিনই হবে। গলদঘর্ম যে হতে হবে তা বলেই দেওয়া যায়।
১৯৮৬
সালের পর যে প্রয়াত ম্যারাডোনার উত্তরসূরিদের আর ট্রফি উঁচিয়ে ধরা হয়নি।
এবার অন্তত সাত বারের ব্যালন ডি অর জয়ীর জন্য জিততে হবে বিশ্বকাপ। তাহলেই
ভিনগ্রহের ফুটবলারের মিলবে অমরত্ব! আর এর জন্য পোলিশদের হারিয়ে জায়গা করে
নিতে হবে নকআউটের মঞ্চে। চাপকে এক পাশে রেখে মেসি কি পারবেন দলকে জেতাতে?
কিংবা সতীর্থরা কি পারবেন উজ্জ্বল একটি দিনের সূচনা করতে? সব উত্তরই মিলবে
৯৭৪ স্টেডিয়ামে!