রণবীর ঘোষ কিংকর।
ঈদকে
 সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ীরা। করোনার সংক্রামণ রোধে সরকারের 
দেওয়া ‘কঠোর লকডাউন’ উপেক্ষা করে কুমিল্লার চান্দিনায় মার্কেট, দোকান-পাট 
খুলে ব্যবসা শুরু করেছে অধিকাংশ ব্যবসায়ী। 
ভ্রাম্যমান আদালতে করা হচ্ছে জরিমানা। তারপরও থেমে নেই ব্যবসায়ীদের দোকান খুলে রাখার প্রবণতা। 
প্রথম
 ৮ দিনের কঠোর লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিন থেকে চান্দিনা উপজেলা সদরের সকল কাপড় 
ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি জুয়েলারি, কসমেটিক্স, স্টেশনারী, 
টাইল-স্যানেটারী, দোকান খুলতে শুরু করে। দ্বিতীয় দফার ‘কঠোর লকডাউন’ 
কিছুতেই মানতে নারাজ তারা। 
ঈদকে সামনে রেখে চান্দিনা বাজারের পৌর 
মার্কেট, কাপড়িয়া পট্টি, চৌধুরী মার্কেট, জব্বার চেয়ারম্যান মার্কেটের 
ব্যবসায়ীরা সকাল ৮টা থেকেই দোকান-পাট খুলে ব্যবসা পরিচালনা করছে। ওইসব 
মার্কেটে ঈদের কাপড় কিনতে ক্রেতাদের ভীড়। যার অধিকাংশ ক্রেতাই নারী। 
পুলিশ
 ও ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান আসলেই শুরু হয় দোকানের সার্টার লাগানোর 
হিড়িক। কেউবা দোকানে ক্রেতা রেখেই সার্টার নামিয়ে দিচ্ছেন। আবার প্রশাসনের 
লোক যাতে মার্কেটে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রত্যেকটি মার্কেটের সামনে 
পাহারা বসানো হয়েছে। প্রশাসনের লোকদের উপস্থিতি টের পাওয়ার সাথে সাথে 
মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা আটকিয়ে দিতে দেখা গেছে। অভিযান চলে গেলে ফের 
খুলে দেদারসে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দোকানীরা। 
১৯ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত কয়েকদিন চান্দিনা বাজার ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে। 
চান্দিনা
 পৌর মার্কেটে কাপড় কিনতে আসা ক্রেতা আসমা বেগম জানান- আমার সাথে আরও ৪জন 
এসেছে। বাড়িতেই লোকমুখে শুনেছি লকডাউনে কাপড় দোকান খোলা। তাই ঈদের 
কেনা-কাটা করতে এসেছি। 
মার্কেটের একাধিক কাপড় ব্যবসায়ী জানান- 
চান্দিনার মাধাইয়া বাজার, মহিচাইল বাজার, দোল্লাই নবাবপুর বাজার, 
দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বরুড়ার রামমোহন বাজার এবং দেবীদ্বারের 
মোহনপুর বাজার চান্দিনা উপজেলা সদরের চারপাশে। ওই সকল বাজারেই দোকান-পাট 
খোলা। তাই আমরাও খুলতে শুরু করেছি। দিনে ২/৩ বার প্রশাসনের লোক আসে, তখন 
বন্ধ রাখি। ঈদকে সামনে রেখে দোকানে লক্ষ-লক্ষ টাকার মাল তুলেছি, সেগুলো 
বিক্রি করতে না পারলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। 
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২২
 এপ্রিল) চান্দিনা বাজারে অভিযান চালিয়েছে ভ্রামমান আদালত। দোকান খোলা রাখা
 ও মাস্ক  ব্যবহার না করার অপরাধে ৮টি মামলায় ১৭ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা 
আদায় করেন ভ্রাম্যমান আদালত। 
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট  ও উপজেলা 
নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ এর নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমান 
আদালতে সহযোগিতা করেন চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামসউদ্দিন 
মোহাম্মদ ইলিয়াছ সহ চান্দিনা থানা পুলিশ। 
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী 
অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ জানান- আমরা বাজারে প্রবেশ করতেই 
দোকানিরা ১ মিনিটের মধ্যে সকল দোকান-পাট বন্ধ করে ফেলে। সামনে যে কয়েকজনকে 
পাওয়া যাচ্ছে তাদেরকেও জরিমানা করা হচ্ছে। ‘কঠোর লকডাউন’ বাস্তবায়ন করতে 
আমরা মাঠে রয়েছি। আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে।                                                                                                         
