
ফারুক আল শারাহ:
কুমিল্লায়
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমলেও মৃত্যুর মিছিল থামছে না। প্রায়
প্রতিদিনই এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ না কেউ মৃত্যুবরণ করছেন। গত
দুইদিনে এখানে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। তাদের মধ্যে ২৪ ঘন্টায়
মৃত্যুবরণ করেন ২ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ২২১ জন। জেলায় নতুন
করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ জন। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা
দাঁড়ালো ৭,৮৯৮ জন। আরো ১৭ জন সুস্থ হওয়ায় সর্বমোট সুস্থ হলো ৬,৯৯১ জন।
জেলা
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বুধবার (২৮ অক্টোবর)
কুমিল্লায় ৩৬টি নমুনার রিপোর্ট আসে। আগত রিপোর্টে ৪ জনের পজিটিভ ও ৩২টি
নেগেটিভ। আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ সিটি করপোরেশন ৩ জন ও চৌদ্দগ্রাম
উপজেলায় ১ জন। জেলায় একদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২ জন মৃত্যুবরণ
করেছেন। তাদের মধ্যে ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধার বাড়ি জেলার মুরাদনগর ও ৬০ বছর
বয়সী বৃদ্ধের বাড়ি দেবিদ্বার উপজেলায়।
জেলায় একদিনে ১৭ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের মধ্যে সিটি করপোরেশন ১৪ জন ও দেবিদ্বার উপজেলার ৩ জন।
সূত্রে
জানা যায়, বুধবার (২৮ অক্টোবর) কুমিল্লা জেলায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১১৯টি। এ
পর্যন্ত জেলায় সর্বমোট নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৪০,৫৪৭টি। তার মধ্যে রিপোর্ট
এসেছে ৩৯,৯১৮টি। এখনো রিপোর্ট প্রক্রিয়াধীন ৬২৯টি। প্রাপ্ত রিপোর্টে পজিটিভ
৭,৮৯৮ জন এবং নেগেটিভ ৩২,০২০টি। তাদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ২২১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬,৯৯১ জন। এখনো হোম আইসলোশান ও হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন ৬৮৬ জন।
কুমিল্লা জেলা করোনা প্রতিরোধ সমন্বয়ক ডা. নিসর্গ
মেরাজ চৌধুরী জানান, জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ
করেছেন তাদের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ
করোনা আক্রান্ত রোগী পূর্ব থেকেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি,
শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, হৃদরোগ সহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
তিনি
বলেন, যারা এসব জটিল রোগে ভূগছেন তাদেরকে চলাফেরায় সর্বোচ্চ সতর্কতা
অবলম্বন করা উচিত। করোনামুক্ত থাকার জন্য যা করনীয় তার সবটাই মেনে চলতে
হবে। আর তারা আক্রান্ত না হলে মৃত্যুর হারও অনেক কমে আসবে।
ডা. নিসর্গ
মেরাজ চৌধুরী বলেন, চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের
আগে ফ্রন্টলাইন ফাইটার বলা হতো। আমি মনে করে, এখন প্রতিটি নাগরিকই
ফ্রন্টলাইন ফাইটার। নিজের, পরিবারের ও অন্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে সকলকে
ভূমিকা রাখতে হবে। অবশ্যই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আর তা মেনে চলতে পারলেই
করোনা সংক্রমণ রোধের পাশাপাশি মৃত্যুর হারও দ্রুত কমে আসবে।