তানভীর দিপু:
পথচারীদের ঝুঁকিপূর্ন মহাসড়ক পারাপার থামছেই না। হাইওয়ে পুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়ার পরও ওভারব্রীজ ব্যবহার করে মহাসড়ক পারাপারে অনীহা সাধারণ মানুষের। দুর্ঘটনার সম্ভাবনার কথা জেনেও সাময়িক সময় বাঁচানোর জন্য যত্রতত্র ভাবেই রাস্তা পার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। পুলিশ চায়, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে রোড ডিভাইডার বা সড়ক বিভাজকের মাঝখানে সুরক্ষা জাল(নেট)।
দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিদিন চলাচল করছে গড়ে ৩০ হাজার যানবাহন। এই মহাসড়কের ১’শ কিলোমিটারেরও বেশি কুমিল্লা অংশে। হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এই মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য ঝুঁকিপূর্ন এলাকা অন্তত ২০ টি। যার মধ্যে বেশির ভাগই জনবহুল বাজার এলাকা। মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত হবার পর এসব বাজার এলাকায় পথচারী পারাপারের জন্য নির্মান করা হয় ওভারব্রীজ। ওভারব্রীজ নির্মানের পরও মহাসড়ক ব্যবহারে পথচারীদের অনীহা। মিয়াবাজার, পদুয়ারবাজার বিশ্বরোড, ময়নামতি সেনানিবাস, ইলিয়টগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা গুলোতে ওভারব্রীজ থাকা সত্ত্বেও রোড ডিভাইডার বা সড়ক বিভাজকের উপর দিয়ে হরহামেশাই রাস্তা পার হতে দেখা যায় পথচারীদের। যে কারনে এসব এলাকাগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও তুলনামূলক বেশি।
ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার পদুয়ার বাজার এলাকায় খুবই চোঁখে পরার মত। ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের এই চার-রাস্তার মোড়ে ওভারব্রীজ ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও রাস্তার উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপারকারীর সংখ্যা নিতান্ত কম নয়। আর এসব পথচারীদের অধিকাংশই নারী, শিশু এবং বৃদ্ধ। যারা ওভারব্রীজে ওঠানামা করার পরিশ্রমের কথা ভেবে এই ঝুঁকি নেন। অনেকে আবার সময় বাঁচানোর জন্য রোড ডিভাইডার টপকে পার হন সড়ক। হাইওয়ে পুলিশের দাবি, বিভিন্ন সময় সচেতনতা কর্মসূচী এবং অনেক সময় যাত্রীদের ওভার ব্রীজ ব্যবহারে বাধ্য করা হলেও পুলিশ ণা থাকলেই আবার সেই পুরোনো দৃশ্যের অবতারনা ঘটে। সকাল এবং রাতে এই পারাপারের দৃশ্য বেশি দেখা যায়। কাভার্ডভ্যান চালক জসিম জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী যানবাহনগুলো পদুয়ার বাজার এলাকা পার হবার আগে রেলওয়ে ওভারপাস পারা হয়ে আসে। ওভারপাস সেতু থেকে নামার সময় যে কোন যানবাহন কিছুটা গতিতে থাকে সেসময় যারা পদুয়ার বাজার এলাকার চাররাস্তার মোড়ে ডিভাইডারের উপর দিয়ে রাস্তা পার হতে চান তাদেরকেই দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয়। অনেক চালকরা চাইলেও গড়তি নিয়ন্ত্রন করতে পারে না। আর পথচারীরা এই রাস্তা পারাপারের সময় অনেকটা ছুটোছুটি করে পার হয়, অনেকে আবার ডিভাইডারের উপর উঠে দাঁিড়য়ে থেকে হুট করে দৌড় দেয়। যে কারনেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এজন্য যাত্রীদের অবশ্যই ফুটওভারব্রীজ ব্যবহার করা উচিত।
একই দৃশ্য দেখা যায় মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম, মিয়াবাজার, ময়নামতি ক্যান্টমেন্ট, ইলিয়টগঞ্জ এলাকাতেও। ওভারব্রীজ ব্যবহার না করেই দিনের পর দিন মহাসড়ক পার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
লালমাই হাইওয়ে ক্রসিং ফাঁড়ির ইনচার্জ জিয়াউল চৌধুরী টিপু জানান, ওভারব্রীজ ব্যবহারে পথচারীদের উদ্বুদ্ধ করতে আমরা প্রতিনিয়তই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সচেতনতামূলক মাইকিং- লিফলেট বিতরণ এবং ওভারব্রীজ এলাকায় পুলিশ সদস্য মোতায়েন রেখে চেষ্টা চালানো হচ্ছে পথচারীরা যেন ওভারব্রীজ ব্যবহার করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে জানানো হয়ে মহাসড়কের জনবহুল এলাকাগুলোেেত যেন খুব শীঘ্রই রোড ডিভাইডারের উপর সুরক্ষা জাল দেয়া হয়।