ঢাকা
ও ঢাকার বাইরে দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে ‘কিশোর গ্যাং’। স্কুল-কলেজের গ-ি
পার হওয়ার আগেই কিশোরদের একটা অংশের বেপরোয়া আচরণ এখন পাড়া-মহল্লায় আতঙ্কের
কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সক্রিয় তারা। করোনা
মহামারিকালেও থেমে নেই কিশোর অপরাধের ঘটনা। রাজধানীর মুগদায় কিশোর হাসান
হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে কিশোর গ্যাংয়ের সাত সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা
মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিম। এ ছাড়া পৃথক
অভিযানে পুরান ঢাকার কদমতলীর জাকির হোসেন হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে
সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবির ওয়ারীর জোনাল টিম।
কিশোরদের এভাবে
অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠার কারণ কী? সামাজিক মূল্যবোধের অবয় যে কিশোর অপরাধ
বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে
নানা অসংগতি রয়েছে। নিজেদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কিশোররা। তাদের
আচরণে পরিবর্তন হচ্ছে। কিশোর বয়সে হিরোইজম ভাব থাকে। আবার কিশোরদের
রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের ‘গ্যাং কালচার’ গড়ে
উঠছে। কিশোর বয়সে ইতিবাচক চর্চার দিকে না গিয়ে নেতিবাচক চর্চার দিকে চলে
যায়। আবার যখন তারা দেখে যে অপরাধ যারা করছে তারা সমাজে বেশি লাভবান হচ্ছে,
সেটা কিশোররা অনুসরণ করে। তাদের ওপর পারিবারিক ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ থাকে
না।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পারিপার্শ্বিক নানা কারণে অনেক আগে থেকেই
অপরাধী তালিকায় নাম এসেছে অল্পবয়সীদের। তাঁরা মনে করেন, দুর্বল আইন-শৃঙ্খলা
পরিস্থিতির পাশাপাশি পারিবারিক শিার অভাবও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী।
সন্তানের শিা ও চরিত্র গঠনের প্রতি অভিভাবকদের যতটা মনোযোগ দেওয়া দরকার, তা
প্রায়ই দেওয়া হয় না। আবার মাদক বিক্রেতা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত
অনেকেই নিজের সামান্য লাভের জন্য কিশোরদের অপরাধজগতে টেনে নেন। অপরাধমূলক
কর্মকা-ে কিশোরদের ব্যবহার করেন।
এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী?
মুক্তির উপায় কী? অপরাধ ও সমাজ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবার ও সামাজিক
পর্যায়ে সঠিক পরিচর্যা ও পর্যবেণ কিশোর অপরাধ কমাতে অনেক সাহায্য করবে। সেই
সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীকেও কঠোর হতে হবে। সামাজিক শৃঙ্খলা রায়
যেকোনো মূল্যে কিশোর অপরাধ দমন করতে হবে।