
দেশব্যাপী অব্যাহত ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আমড়াতলীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার সকালে আমড়াতলী উজ্জীবিত সংঘের উদ্যেগে আমড়াতলী বাজারে ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। দল মত নির্বিশেষে আমড়াতলী এলাকার সকল রাজনৈতিক , সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই মানববন্ধন উপস্থিত ছিলেন ।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে আমড়াতলী এলাকার প্রায় ১৮টি গ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ধর্ষণবিরোধী নানা শ্লোগান দেন।
মানববন্ধনে নোয়াখালীতে বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণ এবং তানোরের গির্জায় কিশোরীকে ধর্ষণের প্রতিবাদ জানানো হয় এবং দোষীদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।
এসময় ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে গোটা নারী সমাজ। নিরাপদ থাকুক সকল মা-বোন, বন্ধ হোক ধর্ষণ ও নির্যাতন।’
বক্তারা বলেন, সারাদেশজুড়ে নারী ও শিশুর ওপর যে নির্যাতন নেমে এসেছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, নারীরা কোথাও নিরাপদ না। এর দায় রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। সরকারের প্রতি আহ্বান অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ৯নং দক্ষিন শীলমুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী ফারুক , ১০নং উত্তর শীলমুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ইসহাক , আব্দুল হক স্যার , আমড়াতলী সি আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপিত শাহ আলম বাবুল , বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা ও সমাজসেবক জিয়াউল হক কাউসার, মুজিবুর রহমান , আমড়াতলী উজ্জীবিত সংঘের অন্যতম সদস্য ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আবু ইউসুফ , জসিম উদ্দিন , প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সায়মা সুলতানা , তরুন সংগঠক মামুনুর রশীদ রাসেল , শেখ আল মামুন কাজল, কবির উদ্দিন বাবু , এমরান হোসেন হেলাল সহ আরো অনেকে ।
এছাড়া বক্তারা বলেন , যদি ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় দ্রুত বিচার হতো, তাহলে আর এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না। তাই সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি এসব লম্পটদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। এ জন্য সামাজিক অপরাধ থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান তারা।
পরিশেষে নারীদের সন্মান রক্ষায় শপথ বাক্য পাঠ করানো হয় : ‘আমি শপথ করছি যে, আমি নারীর বিরুদ্ধে সব নির্যাতনকে অন্যায়, অন্যায্য, অনৈতিক অপরাধ হিসেবে গণ্য করি এবং করবো। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে নারীর বিরুদ্ধে কোনও প্রকার সহিংসতা বা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত হবো না, বা সহ্য করবো না। আমি একজন সচেতন মানুষ হিসেবে কমপক্ষে ৫ জন পরিচিত ব্যক্তিকে নারী নির্যাতন বন্ধের বিষয়ে অবগত করবো। এলাকার প্রতিটি মা-বোনদের সন্মায় রক্ষায় সবর্দা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবো । আমড়াতলীর মাটিতে দিবা-রাত্রীতে নারীদের চলাচলে সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো । আমরাই পারি নারীর বিরুদ্ধে সব নির্যাতন বন্ধ করতে।