
দেশে গত দুই দিনে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা না বাড়ায় কুমিল্লার রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারে বেড়েছে জনসমাগম।
ভোজন ও ভ্রমন বিলাসী বাঙ্গালীদের ঘরে রাখা দায়। বিশ্বজুড়ে নভেল করোনা ভাইরাস আতংকে বাংলাদেশে বসবাসরত সকল নাগরিকদের সতর্ক অবস্থানে রাখতে গত ২৬ মার্চ থেকে সকলকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
তারপর থেকে জনমনে অনেকটা ভীতির সৃষ্টি হয়। গত ২৭ মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে করোনা ভাইরাসে ৪৮জন আক্রান্ত ও ৫জনের মৃত্যুর খবরে আরও বেশি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে জনগণ। ওই সময় কুমিল্লায় খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাহির হতে দেখা যায়নি কাউকে। দোকান-পাট বন্ধ থাকায় এবং সড়ক-মহাসড়কে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকাই ছিল।
রবিবার দুপুরে রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষনা ইষ্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা’র সংবাদ সম্মেলনে ২৮ ও ২৯ মার্চ ৪৮ ঘন্টায় বাংলাদেশে নভেলা করোনা ভাইরাসে নতুন আক্রান্ত নাই বলে জানান। ২৮ মার্চ ৪২জনের এবং এবং ২৯ মার্চ ১০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন কোন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত না হওয়ায় জনমনে ভীতি হ্রাস পায়।
রবিবার (২৯ মার্চ) দুপুরের পর থেকে এ দৃশ্য বদলাতে শুরু করে। রবিবার বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা, বুড়িচং ও দেবীদ্বার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি হাট-বাজারে তুলনা মূলক লোক সমাগম বেড়েছে। সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ থাকা কিছু কিছু দোকান-পাট রবিবার বিকেলে খুলতে দেখা গেছে।
রবিবার সন্ধ্যায় চান্দিনা মধ্য বাজারে কথা হয় রিক্সা চালক শাহজাহান মিয়ার সাথে। তিনি জানান- ‘গত ২ দিন বাজারে উঠতেই পারছি না। আইজ (আজ) বাহির হইছি। মাইসের মুহে (লোক মুখে) হুনছি দেশে বলে আর করোনা নাই’।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিব রাহমান জানান- আমাদের দেশে করোনা সংক্রামিত রোগীদের ৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাথমিক ধাপ নির্ণয় করা হয়েছে। আগামী ৬-১০দিন অধিক গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিবাহিত করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সময় সময় হাত ধোয়ার অভ্যাস অব্যাহত থাকতে হবে। বাংলাদেশ এখন তৃতীয় পর্যায় অতিক্রম করছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০-৩৫ শতাংশ রোগী কোন উপসর্গ (ঠান্ডা-সর্দি-কাশি বা গলা ব্যথা) ছাড়াই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং ওই রোগী আরও অনেকের মধ্যে ছড়াতে পারে।
তিনি জানান- ২৮ ও ২৯ মার্চ কোন রোগীর করোনা সনাক্ত না হওয়ার মানে এই নয় যে কমে গেছে। এমনও হতে পারে একদিনে ৫ জনের নমুন পরীক্ষা করে ৫জনেরই করোনা ভাইরাস সনাক্ত হতে পারে। সেজন্য আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাধ্যতা মূলক ঘরে থাকতে হবে।
ডা. মুজিব রাহমান আরও জানান - ইতালীতে করোনা আক্রান্তের রোগী সনাক্ত হওয়ার পর বেশ কয়েকটি থমকে ছিল। সেটাকে তোয়াক্কা না করায় হঠাৎ ওই সংখ্যা চারগুন বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে আসে। সেই কথা চিন্তা করে আমরা অধিক সতর্ক থাকতে হবে।