
প্রতিপক্ষের
সাথে মাত্র ২০০ টাকা লেনদেনের ঘটনায় বাকবিতন্ডার সূত্রপাত থেকেই খুন হয়
চাঁনপুর এলাকার শরিফুল ইসলাম জনি। তবে এই লেনদেন মাদক সংক্রান্ত কি না
খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। তবে প্রাথমিক ভাবে মাদকসংক্রান্ত ঘটনার
সম্পৃক্ততা দেখছে পুলিশ। এই ঘটনায় এজাহারভুক্ত ৪ আসামীকে গ্রেফতার করেছে
পুলিশ। গতকাল সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার
সৈয়দ নুরুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া আসামীরা হলো- নগরীর
উত্তর গাংচর এলাকার মোঃ জাহাঙ্গীরের ছেলে মোঃ সোহেল (২২), পুরাতন চৌধুরী
পাড়া এলাকার মোঃ হাসান মিয়ার ছেলে মোঃ রাজিব (২১), একই এলাকার মৃত লোকমান
হোসেনের ছেলে হৃদয় (২৩) ও ইদ্রিস মিয়ার ছেলে রফিক (২২)। গত রোববার রাতেই
কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এর
আগে নিহত জনির মা জেসনা আক্তার বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের
বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আমরা ৪ আসামীকে গ্রেফতার করতে পেরেছি। বাকীদেরকেও খুব দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
প্রসঙ্গত,
রোববার ভোরে জনিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় সাগর, রাজিব, রফিক, হৃদয় নামে
আরো কয়েকজন যুবক। পরে বাড়ির সামনেই তারা তাকে মারধর করে এবং একপর্যায়ে
ঘাতকরা ছুরি দিয়ে বুকে আঘাত করে। জনির চিৎকারে আশেপাশের লোকজন জড়ো হতে
থাকলে ঘাতকরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন করে সহযোগিতা চাইলে
কোতয়ালী থানা পুলিশের একটি দল জনিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে
কুমিল্লা মেডকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে জনির বুকে বিঁধে থাকা ছুড়ি
বের করতে ব্যার্থ হয় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। প্রাথমিক ভাবে তাকে চিকিৎসা দিয়ে
ঢাকায় পাঠানো হলে পথেই জনি মারা যায়।
জনির মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে জনির
পক্ষের লোকজন দুপুরে পুরাতন চৌধুরী পাড়া এলাকার খুনে অভিযুক্ত হৃদয়, রাজিব ও
হাসানের বাড়িতে ভাংচুর চালায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ হৃদয়ের বাবা হাসান মিয়া
ও রাজিবকে আটক করে। পরে আরো একজনকে আটক করে পুলিশ। রোববার সন্ধ্যায় আবারো
ঘঅতক রাজিবের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে ওই বাড়ির
৮টি ঘর পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রন করে।
ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করতে এসে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ারুল হক
জানান, হত্যাকান্ডের পর থেকেই এই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিলো। জনি এবং তার
প্রতিপক্ষের বাড়ির দূরত্ব কাছাকাছি। তাই পুলিশের একটি দল দুই এলাকাতেই টহল
দিচ্ছিলো। ফাঁক পেয়ে দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে দেয়। এসময় বাড়িতে কেউ ছিল না
বলেও জানায় পুলিশ।