
নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লায় বিজিবির সাথে বন্দুকযুদ্ধে প্রশান্ত কুমার দাস (২৯)
নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজিবি। শুক্রবার সদর
উপজেলার বিবিরবাজার সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ৪ হাজার ৩৮৫ পিছ ইয়াবা এবং
৩০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয় বলেও বিজিবির দাবি। নিহত শ্রী প্রশান্ত
কুমার দাস নগরীর মোগলটুলী এলাকার বাদল চন্দ্র দাসের ছেলে। তবে স্থানীয়রা
বলছে, প্রশান্ত কুমার দাস ফেনসিডিল সেবন করতো এবং ওয়েডিং প্রোগ্রামের ভিডিও
ফটোগ্রাফি করতেন। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
১০
বিজিবি'র অধিনায়ক পে অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ফারুকী এক ইমেইল
বার্তায় জানান, ২৭ জুন বিকাল ৫টার দিকে ব্যাটালিয়নের বিবির বাজার বিওপির
একটি বিশেষ টহলদল টিক্কারচর ব্রীজ নামক স্থান থেকে ২ হাজার ১৮৫ টি ইয়াবা
ট্যাবলেটসহ একজন মাদক ব্যবসায়ী কুমিল্লার মোগলটুলির বাদল চন্দ্র দাসের ছেলে
প্রশান্ত কুমার দাস (২৯)কে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ২৮ জুন রাতে
কোতয়ালী উপজেলাধীন সংরাইশ এলাকা দিয়ে ইয়াবার একটি বড় চালান আসার তথ্য পাওয়া
যায়। এ তথ্যের ভিত্তিতে তাকে সঙ্গে নিয়ে বিবির বাজার বিওপির একটি বিশেষ
টহলদল সীমান্ত পিলার ২০৮২ হতে আনুমানিক ০৩ কিমি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে
সংরাইশ বেরীবাঁধ নামক স্থানে মাদক বিরোধী অভিযানে গেলে রাত তিনটার দিকে ওৎ
পেতে থাকা তার সহযোগী মাদক চোরাকারবারীরা বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে
বিজিবিকে ল্য করে গুলি বর্ষণ শুরু করে। চোরাকারবারীদের আকষ্মিক গুলি
বর্ষনের ফলে বিজিবির টহলদল কৌশলগত অবস্থান নেয় এবং সরকারী সম্পদ ও জানমাল
রার্থে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিজিবির গুলি বর্ষণের প্রেেিত মাদক চোরাকারবারীরা
ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় মাদক চোরকারবারীদের ছোড়া গুলিতে আটককৃত
মাদক ব্যবসায়ী প্রশান্ত কুমার গুরুতর আহত হয়। ঐ স্থান তল্লাশী করে ২২০০ পিস
ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে
আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত মাদক চোরাকারবারীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। স্থানীয় তথ্য মতে জানা
যায় যে, নিহত মাদক ব্যাবসায়ী প্রশান্ত কুমার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী
এবং সে দীর্ঘ দিন যাবৎ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।
নিহত প্রশান্ত কুমারের
বন্দুবান্ধব ও স্থানীয়রা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, প্রশান্ত কুমার
প্রায়ই ফেনসিডিল সেবন করতো। ইয়াবা সেবন বা বিক্রি করতো না। প্রশান্ত কুমার
ওয়েডিং প্রোগ্রামের ভিডিও ফটোগ্রাফি করতেন এবং স্থানীয় কোন কোন সাংবাদিকের
হয়ে ভিডিও করতেন।
নিহতের বড়ভাই রামু চন্দ্র দাস জানান, বৃহস্পতিবার
বিকালে নাজমুল নামে এক বন্ধু বাসা থেকে প্রশান্তকে দাওয়াত আছে বলে নিয়ে
যায়। পরে আমরা জেনেছি তারা ২/৩ জন সীমান্তের লীপুর ক্যাম্পের কাছে গেছে এবং
সেখানে তাদের আটক করা হয়। আমরা সাথে সাথে সেখানে যাই, দেখি ক্যাম্পে তাদের
ছবি তোলা হচ্ছে। আমাদেরকে ক্যাম্পের ভিতরে যেতে দেয় নি। পরে ১০ বিজিবির
গাড়ি এসে তাদেরকে কোটবাড়ি বিজিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। আমরা সেখানে যাই।
বাইরে আমাদের মোবাইল নাম্বার, নাম ঠিকানা রেখে আমাদেরকে ভিতরে যেতে দেয় নি।
সেখানে আমরা একজনকে বিশ হাজার টাকা বিকাশ করি। যাতে তাকে ছেড়ে দেয়। আমরা
জানতে পারি একজনকে মেরে ফেলবে আর একজনকে ছেড়ে দিবে।
তিনি জানান, পরে
আমরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে আবার লীপুর ক্যাম্পে এসে অপো করতে থাকি। কিন্তু
আমার ভাইকে মেরে ফেলে আর নাজমুলকে চালান দেয়। নাজমুল ইয়ারার ব্যবসা করতো।
প্রশান্ত নিহত হওয়ার পর আমাদের বিশ হাজার টাকা আবার ফেরত পাঠানো হয়।
রামু চন্দ্র দাস দাবি করেন তার ভাই প্রশাস্ত মাদক ব্যবসা করতো না। তার বিরুদ্ধে কোন মামলাও নেই।
১০
বিজিবি'র অধিনায়ক পে অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ফারুকী এ প্রতিবেদককে
জানান, নিহত প্রশান্তের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে কিনা তা জানাতে পারবে পুলিশ।
তিনি জানান, স্থানীয়রা অনেক কিছুই বলতে পারে। অপরাধীরা তো নিজেরা বলবে না।
নিহতের দেয়া তথ্য মতে অভিযান চালিয়ে আমরা ইয়াবা উদ্ধার করেছি। অপারেশনে
যখন যাই তখন তাদের প থেকে গুলি করা হয়েছে। আমরা আহত অবস্থায় তাকে পেয়েছি।
পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
কুমিল্লা
কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সালাম মিয়া জানান, নিহত প্রশান্তের
বিরুদ্ধে কোন মামলার তথ্য পাই নি। আমরা আরো খতিয়ে দেখছি। রাত সাড়ে ৮টা
পর্যন্ত নাজমুল নামে কাউকে কোতয়ালী থানায় সোপর্দ করা হয়নি।