
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার কেশবপুরে রয়েল (২৪) নামে এক নিরহ যুবক গুলিবিদ্ধের ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান বাদী হয়ে মামলা নং ১৪/ তারিখ ৩০ এপ্রিল দায়ের করেন। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মীর শওকত লিটন ও বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ মামনুসহ ৮জনকে আসামী করা হয়। গুলিবিদ্ধ মো. রয়েল মিয়া উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের দরিদ্র মো. নজরুল মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় গত ৩০ এপ্রিল রাতে তিতাস থানা পুলিশ আ’লীগ নেতা মো. মামুনুর রশিদ মামুনকে বাড়ী থেকে ডেকে থানায় নিয়ে আসে ও রুবেল মিয়া নামে এক যুবলীগ কর্মীকে আটক করে এবং ২ বৃহস্পতিবার মে সকালে দু’জনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে জগৎপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান মুন্সির বাড়ির দক্ষিণপাশে একটি টেবিলে বসে মো. রয়েল মিয়া, মো. রবিসহ ৫বন্ধু গল্প করছিলো। এসময় হেলমেট পরা মোটর সাইকেলে আসা দুই আরোহীর একজন তাদেরকে লক্ষ করে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনার পর ৪ বন্ধু সর্ম্পূণ গোপনীয়ভাবে আহত রয়েল মিয়াকে প্রথমে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করায় বলে জানায়। পরে লোক মুখে খবর পেয়ে রয়েল এর বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে যান।
এদিকে গুলির ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েল এর বাবা-মাকে না জানিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জড়িয়ে মামলা করায় এলাকায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। গ্রামবাসী ও সুশিল সমাজ বলছে, বিষয়টি একটি পরিকল্পিত ঘটনা হতে পারে! গুলিবিদ্ধ রয়েলের বন্ধুদের আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে বলেও তারা মন্তব্য করেন। তারা বলেন, গুলির পর ভিকটিমের বাবা-মা’কে না জানিয়ে গোপনে চিকিৎসা দেয়া এবং বাবা-মা’কে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্পূর্ণই রহস্যজনক। এলাকাবাসীর দাবি পুলিশ যেনো নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেন।
গুলিবিদ্ধ রয়েলের সাথে থাকা ৪ বন্ধু জানায়, আমরা বাড়ির দক্ষিনে টেবিলে বসে গল্প করছিলাম। এসময় হেলমেট পরা দুই মোটর সাইকেল আরোহী গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে আমরা তাকে প্রথমে তিতাস হাসপাতালে নিয়ে যাই, সেখানে ডাক্তাররা তাকে চিকিৎসা না দিলে পরে আমরা ঢাকায় নিয়ে আসি। তার অপারেশন করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ যুবকের মা রেহানা আক্তার বলেন, কখন, কারা, কেনো আমার ছেলেকে গুলি করেছে জানি না। আমার ছেলের কোন শত্রুও নেই। গ্রামের মানুষের কাছ থেকে শুনে আমি আমার স্বামী হাসপাতালে আইছি। এখন শুনি চেয়ারম্যান সাহেব নাকি মামলাও করেছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ও জগতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মজবিুর রহমান বলেন, আমার বাড়ির সামনে ঘটনা আমি মামলা করবো না। মানুষ তো কত কথাই বলবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. সেলিম বলেন, চেয়ারম্যান বাদী হয়ে মামলা করেছে। ২জনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারেঅভিযান চলছে। সাথে তদন্তও করা হচ্ছে।